বরিশালসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। ফুটপাতে চলছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেচাকেনা। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুটপাত বাজারগুলো থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা করছে। দক্ষিণাঞ্চলে বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। গ্রামের তুলনায় শহরে শীতের তীব্রতা কম।
এরপরও সর্দি, কাশিসহ শীতকালীন নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন বরিশালবাসী। কিনছেন হালকা ও মাঝারি ধরনের শীতের গরম পোশাক। সামনে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। শুধু তাই নয় হাজী মোহাম্মাদ মহসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, সদর রোডসহ বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে শীতবস্ত্র বেচা-কেনার তীব্র ভিড়। মানুষকে ঈদ বাজারের মতো আগ্রহ নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে দেখা গেছে। ভিড়ের কারণে দামাদামি ও যাচাই বাছাই করে কেনার সুযোগ অনেকটা কম পাচ্ছে ক্রেতারা।
শুধু শীতের কাপড় পছন্দ হলেই একদাম কিনছে। গত বছর এই দিনে তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর এবার তা নেমে এসেছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঠাণ্ডা বাতাস আর কুয়াশা মিলিয়ে তাপমাত্রা কমে গিয়ে প্রকট হচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল দেশের বেশকিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি থেকে তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন,বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু, মাঝারি থেকে কোথাও কোথাও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এ মাসে তাপমাত্রা এ রকমই থাকবে।
গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বরিশালে ৫ দশমিক ৫ , চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৫ আর রাজধানীতে ১০ দশমিক ৫। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহ ও ঠাণ্ডা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি। এদিকে ঠাণ্ডার সঙ্গে কুয়াশাও থাকবে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাস রয়েছে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতে কাঁপছে প্রাণিকুল। এদিকে দেশের বেশকিছু জায়গায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। শীতে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষের কষ্টের পরিমাণ সীমাহীন। শীত নিবারণ করতে কম দামে গরম কাপড় কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। সকালে পথের ধারে খড়কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। রাজশাহীতে ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চর ও দ্বীপ এলাকার মানুষের শীতে দুর্ভোগের পরিমাণ বেড়েছে। শীতের প্রকোপে কাঁপছে এসব জনপদ। রংপুরের তিস্তা, ধরলাসহ ১১টি নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী তিন শতাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ। লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল কাশেম বলেন, এ পর্যন্ত জেলার পাঁচটি হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১১৩ জন। অন্যান্য জেলার হাসপাতালগুলোয়ও বাড়ছে এসব রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
এছাড়া তীব্র কুয়াশার কারণে রাস্তায় চলতে পারছে না দূরপাল্লার গাড়ি। তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাত-দিনের গাড়ির চাপ মিলিয়ে তীব্র হচ্ছে যানজট। কুয়াশার কারণে মাঝে মাঝেই বন্ধ রাখতে হচ্ছে ফেরি ও নৌযান চলাচল। সড়ক-নৌপথই নয়, কুয়াশায় ভণ্ডুল হয়ে যাচ্ছে বিমানের ফ্লাইটগুলোও।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply